বয়স্ক একজন প্রবীণ কারী সাহেবকে পিটিয়ে আহত করার পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলার তুজাপুর ইউনিয়নের সড়ই বাড়ি গ্রামের বিবদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত প্রায় দুঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটে। আহতদের মধ্যে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২জনকে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে এলাকায় এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় গোটা এলাকায় একটি থমথম অবস্থায় বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামের খান গ্রুপ ও তালুকদার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। তালুকদার পক্ষের নেতৃত্ব দেন সরইবাড়ি গ্রামের বাবুল তালুকদার (৬০) ও খান পক্ষের নেতৃত্ব দেন সরইবাড়ি গ্রামের ওবায়দুর ও কবির খান (৫৫)।
গত ১০ দিন আগে এলাকার ও প্রবীণ জনৈক ক্বারী হাসমত সাহেবকে ওবায়দুর ও কবির গ্রুপের নেতৃত্বে শিরু হাওলাদার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারপিট করে আহত করে। এঘটনায় মামলা হওয়ার পর বিষয়টি এলাকার মাতব্বর শ্রেণীর লোকজন মীমাংসার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালায়। তারা পুলিশের সহযোগিতা চাইলে মীমাংসার জন্য পুলিশের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময় চেয়ে নেয়। কিন্তু ওবায়দুর মীমাংসা না করে উল্টো তাদেরকে দেখে নেওয়ার পাশাপাশি এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে গিয়ে পৌঁছায়। পূর্ব শত্রুতা ও বিরোধের জোর ধরে সোমবার সকাল ৬ টার দিকে খান পক্ষের শতাধীক লোক রামদা, ঢাল, সরকি নিয়ে তালুকদার পক্ষের লোকজনের বাড়ি ঘরে গিয়ে হামলা চালায়।
অতঃপর তালুকদার পক্ষের লোকজন নিজেদের মতো করে জীবন বাঁচাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদেরকে মোকাবেলার চেষ্টা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় ব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ততক্ষণ খান গ্রুপের সদস্যরা হাসমতকারীর বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট ভাঙচুরসহ এলাকায় অসহায় গরিব যুবকের মাছ ধরার ভেসাল ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেয়।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় গুরুতর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যে চারজনকে পাঠানো হয়েছেন তারা হলেন হাসমত হাওলাদার (৬৫), আবুল হোসেন মাতুব্বর(৬০), লতিফ হাওলাদার (৬০) ও রাজু চৌধুরী (২৯)। এছাড়া ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত জুবায়ের হাওলাদার (৩২), পান্নু মাতুব্বর (৫০), ওবায়দুর রহমান (৪০), রসমত হাওলাদার (৪৪), আবু জাফর হাওলাদার, রুবেল চৌধুরী (৩৫), মিন্টু খান (৪৪), নাসির চৌধুরী (৪৪), শরীফ খান (২৭), রফিক চৌধুরী (২৭), রুবেল হাওলাদার (৩৫), ইয়াসিন (২৩)।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামে খান গ্রুপ ও তালুকদার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে। পুনরায় যাতে কোন অপৃতিকার ঘটনা এর জন্য এলাকায় এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য