এলাকার শিশুদের নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করতে মাস দুয়েক আগে পুরস্কার ঘোষণা করেন মসজিদের ইমাম। সেই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে ১৪ জন শিশু টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে জিতে নিয়েছেন পুরস্কার। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ইমামকেও পুরস্কৃত করেন মসজিদের মুসল্লিরা।
শিশুদের নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে মসজিদমুখি করতে প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার জয়দেবপুর চরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. জালাল উদ্দিন।
শুক্রবার রাতে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠানে ১৪ শিশুর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ইমাম মো. জালাল উদ্দিনকেও পুরস্কৃত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পটুয়াখালী দাওয়াতুল ইসলাম বদরপুর দরবার শরীফের পীর সাহেব মুফতি সাইয়্যেদ আরিফ বিল্লাহ রব্বানী, আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধলাইরচর দরবার শরীফের পীর সাহেব মুফতি রাকিবুল হাসান রাকিব ও আলফাডাঙ্গা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এমসি মাওলানা তামিম আহমেদ প্রমুখ।
জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে এলাকার শিশুদের নামাজের প্রতি আগ্রহ ও উৎসাহ বাড়াতে পুরস্কার ঘোষণা করেন হাফেজ মো. জালাল উদ্দিন। যেসব শিশু টানা ৪০ দিন জামাতের সঙ্গে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারবে; তাদেরকে পুরস্কার দেয়া হবে। এই ঘোষণার পর থেকে ওই এলাকার শিশুরা মসজিদে এসে নামাজ আদায়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে। নামাজে অংশ নেয়া শিশুরা জানায়, শুধুমাত্র পুরস্কারের জন্য নয় বরং মহান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতেই নামাজ আদায় করেছে তারা। তবে পুরস্কারের ঘোষণা দেয়ায় নামাজের প্রতি আগ্রহটা আরও বেড়ে যায়। তাছাড়া নামাজে অংশ নেয়ায় নামাজের নিয়মকানুনসহ গুরুত্বপূর্ণ দোয়া-দরুদও শিখতে পেরেছে।
ধলাইরচর দরবার শরীফের পীর সাহেব মুফতি রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, মসজিদের ইমামের এই উদ্যোগটিকে সাধুবাদ জানাই। এমন উদ্যোগ আমাদের সমাজকে সুন্দর করবে। এতে শিশুরা নামাজে আগ্রহী হবে। তাদের দেখে অন্যরাও মসজিদে নামাজে আসবে।
মসজিদের ইমামের প্রশংসনীয় এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আলফাডাঙ্গা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এমসি মাওলানা তামিম আহমেদ জানান, জীবনে বহু ওয়াজ মাহফিলে অতিথি হয়েছি। তবে গতকালের ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে। মসজিদে শিশুদের নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করতে ইমামের এমন উদ্যোগ এরআগে কখনো চোখে পড়েনি।
এমন উদ্যোগের বিষয়ে হাফেজ মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ছোট ছোট ছেলেদের নামাজের প্রতি আগ্রহ বাড়াতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপর আমি নিজেই তাদের উপস্থিতি তদারকি করেছি এবং বিভিন্ন দোয়াও শিখিয়েছি। শুরুতে অনেকেই নামাজে উপস্থিত থাকলেও টানা ৪০ দিনের হিসেবে অনেকেই বাদ পড়ে যায়। সর্বশেষ ১৪ জন নামাজ আদায় করে টিকে থাকে। তাই তাদের পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য