উপাচার্য আন্দোলনে না থেকেও দুটি পদ ভাগিয়ে নিলেন জবির দুই শিক্ষক 

  • জবি প্রতিনিধি:
  • রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০৯:০০
  • কপি লিঙ্ক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য হতে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘ এক মাস আন্দোলনে কখনো নিজেকে সম্পৃক্ত না করেও উপাচার্য নিয়োগের প্রথম দিনেই রেজিস্ট্রার ও ছাত্রকল্যানের দুটি পদ ভাগিয়ে নিছেন দুই শিক্ষক। এ নিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভের। 

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পাওয়া পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিন ও ছাত্রকল্যাণ পদে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কে এ এম রিফাত হোসাইন নিয়োগ পান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে কখনোই এ দুজন শিক্ষককে কখনো সম্পৃক্ত হতে দেখা যায় নি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ২৪ এর জুলাই গনঅভ্যুত্থান আন্দোলনে তাদের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপাচার্য আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষক বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য হতে উপাচার্য নিয়োগের দাবি পূরণ হওয়ার পর কিছু শিক্ষকেরা ইতোমধ্যে পদ নিয়ে ভাগাভাগি শুরু করে দিছে। যেটা আমরা গতকাল উপাচার্যের যোগদানের দিনই দেখতে পারছি। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই চারটি পদে নিয়োগ সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলির ঘটনা ঘটেছে। যেটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। এটা উপাচার্যকে বিতর্কিত করার একটা অপচেষ্টা আমার কাছে মনে হয়। 

এ বিষয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, আমরা দীর্ঘ এক মাস যাবৎ আন্দোলন করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য হতে উপাচার্য নিয়োগ আনতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু উপাচার্য নিয়োগের প্রথম দিনই দেখলাম প্রশাসনে বড় রকমের পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাদেরকে পদে দেওয়া হয়েছে তারা ওই পদের জন্য কতটুকু যোগ্য উপাচার্য স্যার কিভাবে জানলেন? এছাড়া উপাচার্যের দাবিতে আমাদের আন্দোলনে কখনো উপস্থিত ছিলেন না এমন শিক্ষককেও পদ দেওয়া হয়েছে। আসলে হচ্ছেটা কি? 

এ বিষয়ে নব নিযুক্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে অফিসে গিয়ে সরাসরি দেখা করতে বলেন তিনি।

আন্দোলনে না থেকেও ছাত্রকল্যান পদ নেওয়ার বিষয়ে নবনিযুক্ত ছাত্রকল্যান পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক কে এ এম রিফাত হোসেন বলেন,, জুলাই বিপ্লবে আমাদের প্রত্যক্ষ ভুমিকা না থাকলেও পরোক্ষ অনেক ভূমিকা ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি নিয়োগে আন্দোলনে নিজের সম্পৃক্ততা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন শিক্ষক হিসেবে এটাতো সরাসরি বলতে পারি না যে, বাহির থেকে ভিসি আসলে তাকে মানবো না।  তাছাড়া, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের (বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন) একজন সদস্য। দলের বাহিরে গিয়ে একক কোন মন্তব্য দিতে পারি না।

দায়িত্ব গ্রহনের প্রথম দিনেই এতগুলো পদে নিয়োগ প্রদান করার বিষয় উপাচার্য অধ্যাপক ড রেজাউল করিম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পদে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তারা সরাসরি জুলাই বিপ্লবের সাথে জড়িত ছিল না। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচার বিরোধী ছিল। তারা সকলেই শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক। 

এদিকে জানা যায়, সাদা দলের কয়েকজন শিক্ষক নেতা আরো নতুন পদ নিশ্চিত করার জন্য রাত অবদি ক্যাম্পাসে অবস্থান করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য