সাবেক ফরিদপুর -৪ নির্বাচনী এলাকা পুনর্বহালের দাবিতে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্রাব) এ এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করে সদরপুর চরভদ্রাসন উপজেলাবাসী। দুই উপজেলার সম্মিলিত উদ্যোগে "সদরপুর-চরভদ্রাসন সংসদীয় আসন ফরিদপুর -৪ পুনরুদ্ধার কমিটির ব্যানারে।
আলোচ্য বিষয়- "সাবেক ফরিদপুর-০৪ (সদরপুর-চরভদ্রাসন) সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবি।"
পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। সভার শুরুতে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
মত বিনিময় সভায় বক্তারা তুলে ধরেন ৭০ এর নির্বাচন থেকে ফরিদপুর -৪ নির্বাচনী আসনটি ছিল সদরপুর চরভদ্রাসন দুটি উপজেলা নিয়ে। মাঝখানে আসনটি সীমানা পরিবর্তন করা হলেও ১৯৮৬ এর নির্বাচনে তা আবার ফিরিয়ে আনা হয। কিন্তু ২০০৮ সালে ১/১১ সরকার স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ক্ষমতায় আনার জন্য ভাংগা উপজেলাকে ফরিদপুর -৪ এর সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয়। এতে নদী ভাঙ্গন কবলিত দুই উপজেলার জনগণ বহুমুখী বৈষম্য শিকার হয়।
উক্ত মত বিনিময় সভায় বিএনপির চেয়ারপার্সোনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জহিরুল ইসলাম শাহজাদা মিয়া বলেন, প্রশাসনিক ,আঞ্চলিক, ভৌগোলিক জনসংখ্যা সকল বিবেচনায় দুইটি উপজেলা একটি স্বতন্ত্র নির্বাচনী এলাকা হওয়ার যোগ্যতা রাখে শুধু রাজনৈতিক কূটকৌশলের কারণে আমাদের সাথে ভাঙ্গা উপজেলা যুক্ত করে দেওয়া হয়।
নির্বাচনী আসনটি ২০০১ সালের সীমানায় পুনর্বহালের দাবিতে উপস্থিত বক্তারা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তারা কমিশন বরাবর স্বারকলিপি জমা দিবেন বলেও জানান নেত্রীস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন- মো. কুদ্দুস খান (সাবেক সচিব- বাংলাদেশ সরকার)।
সভায় সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন- আখতার উজ্জামান ( সদস্য সচিব- ফরিদপুর-০৪ আসন পুনরুদ্ধার কমিটি)। সঞ্চালনা করেন- অ্যাড.ফাহাদ খান শাওন ও এসএম মিজানুর রহমান।
সভায় আলোচকবৃন্দের মধ্যে যারা বক্তব্য প্রদান করেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, জনাব শাহ আলম রেজা, জনাব আনোয়ার হোসেন, জনাব লুৎফর রহমান পাশা, অ্যাড.আবুল বাসায় মৃধা, অ্যাড. মাহবুবুর রহমান দুলাল, মনজুরুল হক মৃধা, জনাব মোস্তফা করিবসহ আরো অনেকে। উক্ত সভায় প্রায় দুই শতাধিক লোকের সমাগম হয়।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার পর হতে ১৯৭৯ সালের নির্বাচন ব্যতীত বাকি সব নির্বাচনে সদরপুর- চর ভদ্রাসন উপজেলা মিলে ফরিদপুর-০৪ আসন গঠিত ছিল। কিন্তু ১/১১ এর সরকার আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সুবিধা দেওয়ায় জন্য এই দুই উপজেলার সাথে ভাঙা উপজেলা জুড়ে দেয়, যার ফলে এই দুই উপজেলার মানুষ বরাবরই বৈষম্যের শিকার।
স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পরে আমরা আর বৈষম্যের শিকার হতে চাই না।
আমরা ফরিদপুর-০৪ আসন পূর্বের অবস্থায়, অর্থাৎ সদরপুর- চর ভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে পুনরায় ফেরত চাই।
তিনি আরও বলেন, সদরপুর-চর ভদ্রাসন উপজেলা মূলত চরাঞ্চল, পক্ষান্তরে ভাঙা উপজেলা সমতল(সাবুক অঞ্চল)।
এ কারণে এ দুই উপজেলার মানুষের সাথে ভাঙা উপজেলার মানুষের আচার-আচরণ,আঞ্চলিক ভাষা ও কৃষ্টি-কালচার, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতা রয়েছে।
উল্লেখ যে বাংলাদেশের অনেক নির্বাচনী আসন রয়েছে যার তুলনায় সাবেক ফরিদপুর -৪ আসনের ভোটার সংখ্যা বেশি।
মন্তব্য