আমরি সদরপুর

  • মাতুব্বর তোফায়েল হোসেন :
  • বৃহস্পতিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:১১:০০
  • কপি লিঙ্ক

ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন। ফরিদপুরের এই তিনটি উপজেলা নিয়ে একটি সংসদীয় আসন রয়েছে। পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা, শিবচর, মাদারীপুর সদরসহ একটি বিশেষ জনপদ হিসেবে চিহ্নিত এই এলাকা। ঐতিহাসিকভাবে এর একটি যোগসূত্র যেমন রয়েছে, তেমনি এর ভূপ্রাকৃতিক গঠনেও রয়েছে বিশেষ সাদৃশ্য। নদী-নালা-চর-বিল-বাওড় অধ্যুষিত এই এলাকার ফসল, ফলফলাদি এবং ভাষা ও সংস্কৃতির সাদৃশ্য সহজেই অনুমেয়। শহর হিসেবে সদরপুর ও চরভদ্রাসন পৌরসভা নয়। বাকিগুলো অনেক আগেই পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়েছে। 

সদরপুরে রয়েছে ঐতিহাসিক বহু গরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও নিদর্শন। বাইশরশি জমিদার বাড়ি, বৃহত্তর ফরিদপুর এবং বরিশাল অঞ্চলের প্রবল প্রতাপশালী বাইশটি পরগনার কেন্দ্রবিন্দু। পরিত্যাক্ত অবস্থায় ইতিহাসের স্মারক হয়ে বাড়িটি এখনো পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সুফী সাধক খাজা হাসমত আলী এবং খাজা সুলতান মিয়ার মুখরিত প্রাঙ্গন আটরশি ও চন্দ্রপাড়া। বিস্তৃত সবজি বাগান এবং ধূ ধূ চরাঞ্চল। আড়িয়াল খাঁ নদীর আদি প্রবাহ ভুবনেশ্বর নদীর সবুজ সর্ফিল গতিপথ ধূসর অতীতকে মনে করিয়ে দেয়। ছায়া সুনিবিড় ঘন-চিরল জঙ্গল ঘেরা অসংখ্য জনপদ। ভাব আন্দোলন এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক চর্চার পূণ্যভূমি সদরপুরের সহজ সরল মানুষের জীবন এখনো সংবেদনশীল মানুষের কাছে আরাধনার বিষয়।

প্রমত্তা পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদীর পলি প্রবাহে ধন্য এবং ঋদ্ধ হয়ে বিরাজমান প্রশান্ত জীবনের লীলাভূমি লজ্জাবতী রূপবতী লাস্য এই সদরপুর। বিশুদ্ধ সবুজ শষ্য ও তাজা সবজির আঘ্রানে হৃষ্টপুষ্ট এক জনপদ। বহু জ্ঞানী ও গুণীজন সমাদৃত এই মাটি বিচিত্র রসে সিক্ত। উত্তর ও পূর্ব পাশ ধরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদীর ব্যারিকেডে সদরপুর দৃশ্যত বদ্ধ ভূখন্ড। এর উপর দিয়ে সরাগে এদিক থেকে ওদিক টপকে যাওয়া সম্ভব নয়। হয়তো এজন্যই এলাকাটিতে এখন পর্যন্ত জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক মাফিয়ারা লোকাল অফিস খুলতে পারে নাই। তবে অদূর ভবিষ্যতে নদীর ব্যারিকেড ভেঙ্গে সুগম চলাচলের পথ খুলে গেলে অশান্ত হয়ে উঠতে পারে সদরপুর, অন্য সব অশান্ত এলাকার মত। আপাতত সদরপুর মনোহর, নিরাপদ ও নিরুপদ্রব এক জনপদের নাম হয়ে মার্জিত মানুষের চোখে আকর্ষণের কারন হয়ে আছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য