ঢাবির মুহসীন হলের ১ম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান

  • ঢাবি প্রতিনিধি:
  • শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩ ০২:০৩:০০
  • কপি লিঙ্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলে গতকাল শুক্রবার (১০ মার্চ) দিনব্যাপী চলে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। এতে প্রায় হাজারের বেশি সাবেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

নবীন - প্রবীণদের পদচারণায় মুখরিত হয় হলে ভিতরে এবং বাইরে। স্মৃতিচারণে প্রবীণরা তাদের আবাসিক রুমগুলোতে বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে আসেন। অনেকে স্মৃতি হিসাবে নিজেকে ক্যামেরাবন্দী করেন স্মৃতিবিজড়িত রুমের সাথে। বহুল প্রত্যাশিত সুবর্ণজয়ন্তী ও হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান হওয়ায় তারা আনন্দিত। 

ভিন্নমতের অনেক ছাত্রনেতাদের না দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহ হলের সাবেক শিক্ষার্থীরা। হল প্রশাসন ও হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অতি রাজনীতির করণেই এমনটাই হয়েছে বলে জানান সাবেক ছাত্রনেতারা। সাবেক ছাত্রনেতাদের উপস্থিত ছিল কম।  অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেও আসে নি। আবার অনেকেই এসে অনুষ্ঠানস্থল অংশ নিয়ে চলে যান।

 শুক্রবার সকালে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের মাঠে হলের সুবর্ণজয়ন্তী ও হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে সংযুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র ওবায়দুল কাদের।

অনুষ্ঠানে অতীতে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য ছাত্র সংগঠন থেকে নির্বাচিত সাবেক একঝাঁক ছাত্র নেতাদের না দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের।

সব ক্ষেত্রে রাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়ে ঢাবির হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল অ্যলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “সব জায়গায় পলিটিক্স করতে চাই না। কিছু কিছু জায়গা রাজনীতি থেকে বাইরে রাখতে হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রিত অনুষ্ঠান এটা অ্যালামনাইয়ের চরিত্র হওয়া ঠিক না। মন্ত্রীকে এনে প্রধান অতিথি করতে হবে এর সঙ্গে আমি একমত না। এখানে আমি মুহসীন হলের আবাসিক প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আসব। একসঙ্গে বসে আড্ডা দিব, হাসিখুশি করব এটাই কাম্য। যারা প্রথম এ আয়োজন করেছেন পরবর্তীতে যেন এটা রাজনীতি মুক্ত থাকে”।

জানা যায়, দানবীর হাজী মুহাম্মদ মুহসীন এর নামে ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ‘ প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

হলের ছাত্র হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ সহ দেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গ এই হলে মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়েছেন। 

শুরুতে ষাটের দশকের শেষ দিকে এনএসএফ, সত্তরের দশকে ছাত্রলীগ, আশি ও নব্বইয়ের দশকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আধিপত্য ছিল হলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সে আধিপত্য ছাত্রলীগের ।

একসময়ে  হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ ছাত্রলীগ, জাতীয় ছাত্রলীগ ছাত্রদল থেকে ডাকসুর ভিপি জিএস নির্বাচিত হন। ফলে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল থেকে অনেক কেন্দ্রীয় নেতা উঠে এসেছে। ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরও এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

জানতে চাইলে অনেক সিনিয়র নেতারা জানান, হলের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সার্বজনীন হওয়ার কথা। দলমতের উর্ধ্বে উঠে সবাই মিলে এটি করা উচিত ছিল। সাবেক ছাত্রনেতাদের কে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কমিটিতে হল সংসদ এবং ডাকসুতে নির্বাচিত সদস্যদের এসব অভিযোগের বিষয়ে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি ও  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুটা বিরক্ত প্রকাশ করে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য