দেশে ডলার সংকট কেটে যাওয়ায় পুরোদমে শুরু হয়েছে রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানি। চলতি মাসে মাত্র ১৬ দিনের মধ্যে আমদানিকারকরা মোংলা বন্দরের মাধ্যমে এনেছে ১৬২৯টি বিলাসবহুল গাড়ি। শনিবার দুপুরে জাপান থেকে বিলাসবহুল ৯২৬টি গাড়ির একটি চালান মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে।
মালয়েশিয়া পতাকাবাহী ‘এমভি মালয়েশিয়া স্টার’ নামের গাড়িবাহি জাহাজটি মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করার পর বিকালে আমদানিকৃত এসব গাড়ি খালাস কাজও শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ৪ মে একই জাহাজে করে জাপান থেকে মোংলা বন্দরে আনা হয় ৭০৩টি আমদানিকৃত গাড়ি।
ডলার সংকটের কারণে গাড়ি আমদানি কমে যাওয়া গত এক বছরে ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারায় মোংলা কাস্টমস হাউজ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস হাউজ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মালয়েশিয়া স্টার নামের জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনশিয়েন্ট স্টিম শিপের ব্যবস্থাপক মো. ওহিদুজ্জামান জানান, এই চালানে মোট ১৩৭৬টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৫০টি গাড়ি গত ১৮ মে ৪৫০টি চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করা হয়। বাকি ৯২৬টি গাড়ি শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে খালাস হচ্ছে।
জাপানের বিলাসবহুল এসব গাড়ি সিঙ্গাপুরের একটি বন্দর থেকে বোঝাই করে গত ১২ মে জাহাজটি মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। শনিবার দুপুরে জাহাজটি মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করার পর বিকালে আমদানিকৃত এসব গাড়ি জাহাজ থেকে খালাস কাজও শুরু হয়েছে। মোংলা বন্দরে আসা এসব বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে রয়েছে এক্সিও, প্রিমিও, এলিয়ন, অ্যাকুয়া, প্যারাডো ও মিনিবাসসহ একাধিক ব্র্যান্ডের গাড়ি।
বাংলাদেশ রিকন্ডিশনড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স আ্যন্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডা) সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিতিশীলতার প্রভাবে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ডলারের ভয়াবহ সংকট ছিল। এ কারণে গাড়ি আমদানি করা যাচ্ছিলো না। অর্থনৈতিক সংকটের আগে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মাসে দেড়-দুই হাজার গাড়ি আমদানি হতো। গত ৯ মাসে দেশে তেমন গাড়ি আমদানি করা যায়নি।
তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসের পরে ডলার সংকট কাটতে শুরু করায় ব্যাংকগুলো এলসি খোলা যাচ্ছে। সে কারণে এখন দেশে পুরোদমে গাড়ি আমদানি শুরু হয়েছে। এপ্রিল মাসে মোংলা বন্দরে এসেছিল ৫০০টি গাড়ি। চলতি মাসে মাত্র ১৬ দিনের মধ্যে দুই দফায় মোংলা বন্দরের মাধ্যমে বিলাসবহুল ১৬২৯টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে বলেও জানান বারবিডা সভাপতি।
মোংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার মাহফুজ আহমেদ জানান, গাড়ি আমদানি থেকে মোংলা কাস্টমস বছরে সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় করে থাকে। গত বছরে গাড়ি আমদানি কম হওয়ায় মোংলা কাস্টমসের ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। মোংলা বন্দরের মাধ্যমে নতুন করে আবারো পুরোদমে গাড়ি আমদানি শুরু হওয়ায় রাজস্ব আয় বাড়বে বলে জানান এই কাস্টমস কর্মকর্তা।
মন্তব্য