চার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিশেষ গুচ্ছের প্রস্তাব

  • ডেস্ক
  • মঙ্গলবার, ০৩ নভেম্বর ২০২০ ১১:২৮:০০
  • কপি লিঙ্ক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও দেশের বড় পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির ব্যাপারে অনাগ্রহী। এরই মধ্যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরাই সরাসরি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থায় সমন্বিত বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসা সম্ভব না হলে অন্তত ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে চলা চারটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েই গুচ্ছের প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। আর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেতৃত্ব দিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ ভর্তিতে না এলে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়বে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও। এতে করোনার মধ্যেই শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দৌড়াতে হবে সারা দেশে। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ১০টি জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। তাই  যেকোনোভাবেই হোক সব বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ ভর্তিতে আনার চেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ফারজানা ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সোবহান এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারের সঙ্গে গত রবিবার বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেখানে তাঁদের পক্ষে সমন্বিত ভর্তিতে আসা সম্ভব না হলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসার কথা বলা হয়েছে। সেটাও সম্ভব না হলে ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে চলা চার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিশেষ গুচ্ছের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সঙ্গেও এ ব্যাপারে বৈঠক করবেন বলে ভিসিদের জানিয়েছেন মন্ত্রী।

এদিকে গত ১৭ অক্টোবর উপাচার্য পরিষদের সভায় অনলাইন পরীক্ষার ব্যাপারে প্রস্তাব আসে। অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূরের একটি সফটওয়্যারের প্রস্তাব করা হয়। এই সফটওয়্যারে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব কি না তা যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) অনুরোধ করা হয়। আজ মঙ্গলবার সফটওয়্যারটি যাচাই করতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে সভা ডেকেছে ইউজিসি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ড. মুনাজ আহমেদ নূর যে সফটওয়্যারের প্রস্তাব করেছেন সেটি নতুন নয়। এ ধরনের সফটওয়্যারে চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম, ২০-২৫ জনের বেশি নয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে যুক্ত করে বিদ্যমান ইন্টারনেট ব্যবস্থায় নেওয়া কতটা যৌক্তিক ও নিরাপদ হবে, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে কয়েকজন ভিসি সফটওয়্যার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক সফটওয়্যার কেনা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর নিজের বিশ্ববিদ্যালয়েও একাধিক সফটওয়্যার কেনা হয়েছে।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ থেকে যে সফটওয়্যারের কথা বলা হয়েছে তা যাচাইয়ে আজ সভা ডাকা হয়েছে। এখানে তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। তবে আমার ধারণা, অনলাইনে নয়, এবার সরাসরিই ভর্তি পরীক্ষা হবে।’

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের দুর্দশা লাঘবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৪টি এখনো গুচ্ছ ভর্তির ব্যাপারে একমত।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভর্তির ব্যাপারে আমরা এখনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে যা করব, শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই করব। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলে আমরা সেই উদ্যোগের সঙ্গেই থাকব। যদি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুচ্ছের নেতৃত্বে বুয়েট আসে, তাহলেও আমাদের আপত্তি নেই।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য