বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতার আমিরের বিশেষ বিমান এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছেছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এটি অবতরণ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ড. এনামুল হক চৌধুরী।
এদিকে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা উপলক্ষে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়া চিকিৎসার উদ্দেশে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে লন্ডনে যাত্রা করবেন। তাকে বিদায় জানাতে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর বিমানবন্দরে আগমনকে কেন্দ্র করে বিশেষ এই সতর্কাবস্থা নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
কাতারে আমিরের পাঠানো ওই ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স’ হলো দ্রুতগামী এয়ারবাস এ-৩১৯ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। এর ভেতরে রয়েছে অত্যাধুনিক সব চিকিৎসা সুবিধা।
মুমূর্ষু রোগী দ্রুত স্থানান্তর ও জরুরি কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। এটি মূলত বাণিজ্যিক বিমান ও হেলিকপ্টার পরিষেবা। এই পরিবহনের খরচ কিছুটা বেশি হলেও আপৎকালীন সময়ে তাৎক্ষণিক পরিষেবা মেলে। জরুরি অবস্থায় রোগী পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স
এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে যা থাকে
একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স হলো একটি জরুরি বিমান পরিষেবা।
এতে সব জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম, ভেন্টিলেটর, ডিফিব্রিলেটর এবং ডাক্তারদের একটি বিশেষজ্ঞ দল দিয়ে সজ্জিত। এটি শহর বা দেশের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের পরিবহন করতে ব্যবহৃত হয়।
এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে যেসব সুবিধা রয়েছে
আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম : এই বিমানগুলিতে সব ধরনের জরুরি চিকিৎসা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সর্বশেষ প্রযুক্তির চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেন্টিলেটর, ডিফিব্রিলেটর, মনিটর, ইনফিউশন পাম্প এবং অন্যান্য জরুরি ওষুধ।
আইসিইউ সুবিধা : বিশেষ এই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স একটি পূর্ণ আইসিইউ সুবিধা রয়েছে। রোগীর কঠিন কোনো পরিস্থিতিতে তাকে স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা থাকে।
ডাক্তার এবং নার্স : এই বিশেষ বিমানে সব সময় অত্যন্ত দক্ষ ডাক্তার এবং নার্স থাকেন, যারা রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিতে সক্ষম।
স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ পরিবেশ : রোগীর আরামের জন্য এই বিমানগুলি খুবই স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে রোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আলাদা আলাদা জায়গা থাকে।
স্বয়ংসম্পূর্ণ : বিশেষ এই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে থাকে।
অর্থাৎ, দীর্ঘ দূরত্বের বিমান যাত্রার ক্ষেত্রেও রোগীর সব ধরনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের খরচ কত?
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া দেশ ভেদে পরিবর্তিত হয়, তবে সাধারণত এয়ার মেডিকেল ইভাক্যুয়েশন পরিষেবার সাথে সম্পর্কিত খরচগুলো গণনা করা হয়-
১. এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার দূরত্ব
২. রোগীর সাথে আসা লোকের সংখ্যা
৩. জরুরি মাত্রা
৪. রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা
উল্লেখ্য, কাতারের আমিরের পাঠানো এই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, চিকিৎসক, বিএনপি নেতারা, ব্যক্তিগত কর্মী ও গৃহকর্মী থাকবেন।
মন্তব্য