চরভদ্রাসন সরকারি কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, আতঙ্কে থাকেন শিক্ষার্থীরা 

  • চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
  • সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩ ১২:০৭:০০
  • কপি লিঙ্ক

একদিকে হেলে রয়েছে ভবনটি। বের হয়ে আছে শ্রেণিকক্ষের বিমের রড। দোতলায় একটি শ্রেণিকক্ষের বিমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সেখানে ঝুঁকির মধ্যেই চলছে পাঠদান। ফলে ভবন ভেঙে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন সরকারি কলেজের একটি ভবনের অবস্থা এমন নাজুক।

খবর নিয়ে জানা যায়, এখানে একটি সম্মেলন কক্ষ, একটি কম্পিউটার ল্যাব ও একটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। কলেজে একটি তিনতলা ও একটি দোতলা ভবন আছে। তিনতলাটি বিজ্ঞান ভবন এবং দোতলা ভবনটি মানবিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিজ্ঞান ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর তিনতলায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সেই থেকে পরিত্যক্ত হিসেবে রয়েছে তিনতলা।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত। ১০ একর ৪৮ শতক জমি নিয়ে গঠিত কলেজটির শুরুতে নাম ছিল ‘চরভদ্রাসন আইউব কলেজ’। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে কলেজের নাম থেকে ‘আইউব’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘চরভদ্রাসন কলেজ’ নামকরণ করা হয়। 

এরপর ১৯৮৮ সালের ২ জানুয়ারি সরকারীকরণ করা হয় কলেজটি। বর্তমানে কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক মিলে এক হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এখানে ২৯ জন শিক্ষকের মধ্যে কর্মরত আছেন ২২ জন। শিক্ষকের সাতটি পদ শূন্য রয়েছে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯৯২ সালে তিন তলাবিশিষ্ট এই ভবন নির্মাণ করা হয়। এর নিচতলায় পাঁচটি কক্ষের মধ্যে একটি অধ্যক্ষের, একটি উপাধ্যক্ষের, একটি শিক্ষক মিলনায়তন, কর্মচারীদের জন্য একটি কক্ষ এবং একটি ভাণ্ডারকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দোতলায় ছয়টি কক্ষের মধ্যে পশ্চিম দিকের শ্রেণিকক্ষের বিমের ঢালাই করা বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে রড বের হয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। ভবনটি উত্তর দিকে হেলে পড়েছে কিছুটা।

মানবিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত কলেজ ক্যাম্পাসের দোতলা ভবনটির অবস্থা তুলনামূলক ভালো। এ ভবনও নির্মিত হয়েছে ১৯৯২ সালে। মানবিক ভবনের নিচতলায় কলেজের পাঠাগার অবস্থিত, যার নাম ‘অধ্যক্ষ আজহারুল হক পাঠাগার’। এছাড়া দুটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। দোতলায় রয়েছে একটি বড় কক্ষ। কক্ষটি কলেজের শিক্ষকরা আবাসনস্থল হিসেবে ব্যবহার করেন।

কলেজছাত্র মো. জাবেদ আলী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করার সময়ে ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। মনে হয় এই বুঝি মাথার ওপর ছাদ ভেঙ্গে পড়ে। তারপরও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাগর মণ্ডল বলেন, ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পলেস্তারা খসে খসে পড়ে। কখন যে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে সেই চিন্তায় থাকি।

শওকত শেখ নামে একজন ছাত্রের অভিভাবক বলেন, ভবনের জীর্ণদশা। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। ছেলেকে কলেজে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকি।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ নিখিল রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, কলেজটিতে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। নানা সমস্যার মধ্যে জরাজীর্ণ ভবন। শিক্ষকদের পদ শূন্য। কলেজে নেই কোনো ছাত্রাবাস। আমি সদ্য যোগদান করেছি। কলেজের ভবনসহ নানা সমস্যার বিষয়ে দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন ও পরামর্শ করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য