উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা না থাকায় দুই মাস যাবত বেতন পাচ্ছেন না চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ডাক্তার-নার্সসহ ১০৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারী। এমন অবস্থা বিরাজ করছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
গত সেপ্টেম্বর মাসে সর্বশেষ বেতন পেয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মচারীরা। কিন্তু জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তারপর থেকে আর বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। কবে বেতন পাবেন সে অনিশ্চয়তাও কাটছে না তাদের। বেতন না পেয়ে অর্থকষ্টে ভুগছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সবাই। কর্মচারীদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই সঠিক সময়ে মাসের বেতন ভাতা তারা পাচ্ছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর ২০২৪ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান দুর্নীতি ও অনিয়মের আখ্যা দিয়ে বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে বদলি হয়ে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর এ পদে কোন কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসের পদটিও দীর্ঘদিন যাবত শূণ্য রয়েছে। বর্তমানে ডাক্তার আবিদ হোসেন নামে একজন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে আরএমও এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। এতে করে হাসপাতালের স্টাফদের বেতন আটকে যায়।
সৈয়দ নিজামুল হক সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক বলেন, ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে। তার বেতনের টাকায় চলে সংসার। দুই মাসের বেতন না পেয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।
উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. জুয়েল রানা জানান, দুই মাস বেতন পাই না। আমিসহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারি মো. আখতারুজ্জামান মিয়া বলেন, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা, সারা মাসের সংসার খরচ বেতন দিয়েই চলে। বেতন না পাওয়ার কারণে চরম অর্থকষ্টে ভোগছেন তার পরিবার।
সমস্যার বিষয়ে বর্তমান দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আবিদ হোসেন জানান, বেতন-ভাতা পাওয়ার জন্য আমি চেষ্টা করছি। কাগজপত্র প্রস্তুত করে সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। অাশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন সাজেদা বেগম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে অাশা করছি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দ্রুত আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করিবেন। তা না হলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য আমি নিজেই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
মন্তব্য