চলছিল বিদ্যুৎ এর মিটার কারসাজি। বেশ ঘনঘটা করে চালানো হয় মাস শেষে পকেটে ভরপুর হত কানায় কানায়। কিন্তু সেই অবৈধ আয়ের উৎস জানার পর বাদসাধে একজন সচেতন সাংবাদিক। আর যায় কোথায়? বিষয়টি ধরে ফেলায় সাংবাদিক ও তার পরিবারের উপর ঘটে হামলার ঘটনা।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামে। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে সাংবাদিক ও তার পরিবার নিরাপত্বাহীনতায় ভুগছে।
এদিকে একজন সাংবাদিক ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় সকল সাংবাদিক সমাজের মধ্যে এনিয়ে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চলছে তীব্র নিন্দা প্রকাশ।
হামলার শিকার সাংবাদিক রবিউল হাসান রাজিব। তিনি দৈনিক মুক্ত খবর ও মর্নিং গ্লোরি নামের পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জামাল মল্লিক গং দীর্ঘদিন যাবত ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, ভ্যান চার্জ দেয়ার ব্যবসা করে আসছে। প্রতিদিন ৪০/৫০ টি অটো চার্জ দেয়। অভিযোগ উঠে যে তারা মিটার কারসাজি করে বিদ্যুৎ বিল কম দিয়ে আসছে।
খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনার সত্যতা জানার চেষ্টা করে সাংবাদিক রাজিব। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন তিনি। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে এসেও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন এবং অভিযুক্তদের অফিসে ডেকে নেন। খবর পেয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও ঘটনাস্থলে যান।
গত ১ জুলাই অভিযুক্তরা বিদ্যুৎ অফিসে হাজির হয়ে মুচলেকা দিয়ে আসে। বাড়ি ফিরে এসেই তারা হুমকি দিতে থাকে সাংবাদিক রাজিবসহ তার পরিবারের সদস্যদের।
আমরা বিদ্যুৎ বিল দেই বা নাই দেই তাতে রাজিব কেন আমাদের বিরুদ্ধে সরকারি লোকজনকে জানিয়েছে। ওরে যেখানে পাবো সেখানেই হামলা করা হবে।
২ জুলাই বাড়ির সামনে ইউপি সদস্য রাহাতুল হাসানের সাথে কথা বলছিল রাজিব। এ সময় অতর্কিতভাবে অভিযুক্ত জামাল মল্লিক, রাজ্জাক মল্লিক, ইমরান মল্লিক, সাহিদ মল্লিক, সাকিব মল্লিক, নাছিমা বেগমসহ আরও ৫/৬ জন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এসময় রাজিবের স্ত্রী তানিয়া আক্তার স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে হামলাকারীরা। রাজীবের ৬ বছরের কন্যা রাফিয়া তাসনিম বাবাকে ধরে কান্নাকাটি করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ঘটনার সময় ভিডিও করতে গেলে রাজীবের ও তার স্ত্রীর মোবাইল ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। পরে ইউপি সদস্য মোবাইল ফোন উদ্ধার করে ফেরত দেয়।
সাংবাদিক রাজিব জানায়, আমার চিৎকারে আশেপাশের বাড়ির লোকজন বের হয়ে এসে হামলাকারীদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা নেই আমি। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিয়েছে বলে জানান। ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন বলে জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাহাতুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জামাল মল্লিক আমার কাছে নালিশ দিয়েছিল যে সে বিল দেক বানা দেক, রাজিবের এইটা নিয়ে মাথা ব্যথা কেন। আমি তাকে বলেছিলাম বিষয়টি দেখা যাবে উত্তেজিত হওয়ার দরকার নেই। রাজিবকে ডেকে বাড়ির সামনে এই ব্যাপারে কথা বলতেছিলাম, ওই সময়েই জামাল মল্লিক, তার ছেলে ও শ্যালকরা মিলে সাংবাদিক ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায়।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ হাসানুজ্জামান জানান, পুলিশ একটা অভিযোগ পেয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য