ফরিদপুরে শাহারিয়া জামান (৫০) নামে এক ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১২ জুন) বিকেলে ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের মমিনখারহাট বাজারে কালাম বগুড়া মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে গিয়ে শাহারিয়া একাই হাজির হন। দেখতে চান ওই দোকানের বিভিন্ন লাইসেন্স।
এরপর দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে নানা অনিয়ম খোঁজার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিককে বলেন নানা অনিয়ম পাওয়া গেছে, ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দোকান মালিক এক পর্যায়ে নত হয়ে এক হাজার টাকা দেন ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট শাহারিয়াকে। এরপর দোকান মালিক তার কাছে রশিদ চান। তখনই বাধে বিপত্তি।
রশিদ দিতে না পারায় ওই দোকান মালিক বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের ডেকে আনেন। তাকে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করতেই ধরা খেয়ে যান ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট শাহারিয়া। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
কালাম বগুড়া মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের স্বত্তাধিকারী আশিকুর রহমান জানান, শাহারিয়া জামান দোকানে এসে নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। পরে দোকানের বিভিন্ন মিষ্টি ভালো না বলতে থাকেন। একপর্যায়ে বলেন ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দেন। আমি তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে বলি আপনি এসেছেন সম্মানে এটা দিলাম।
তিনি আরও জানান, যখন রশিদ চাইলাম, তখনই নানা টালবাহানা করতে থাকেন। আমার আগে থেকেই ওনাকে দেখে সন্দেহ হচ্ছিল, রশিদ দিতে না পারায় তখন নিশ্চিত হলাম উনি ম্যাজিস্ট্রেট না। এছাড়া যখন ম্যাজিস্ট্রেট বের হয় তখন তার সঙ্গে পুলিশসহ অন্যরাও থাকে। উনি এসেছেন একা। পরে বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের ডেকে এনে উনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তখন বলেন উনি ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট। পরে থানা পুলিশের কাছে তাকে তুলে দেয়া হয়।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান জানান, ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট শাহারিয়া জামানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট শাহারিয়া জাহান রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
মন্তব্য