ময়মনসিংহের ভালুকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের বিনানুমতিতে সাত মাস অনুপস্থিত থাকা প্রধান শিক্ষক হঠাৎ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে ক্লাস ছেড়ে মাঠে নেমে আসে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তারা প্রধান শিক্ষকের অব্যাহতি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও একাধিক সদস্যের হস্তক্ষেপে প্রধান শিক্ষক অফিস কক্ষ ছেড়ে গেলে মাঠে নামা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরে।
আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ভরাডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই ঘটনাটি ঘটে।
ক্লাসে ছেড়ে মাঠে নেমে আসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জানায়, ভরাডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকগণ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হকের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছরের ১২ জুলাই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।
এদিকে, শিক্ষকদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম তরফদার উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়ন সোনার বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুল ইসলাম মানিককে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে দেন। পরে, ওই কমিটি তদন্ত কাজে প্রধান শিক্ষক আজিজুল হকের সহায়তা চাইলে তিনি তদন্তে সহায়তা না করে গত ১৭ জুলাই থেকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়া শুরু করেন। পরিচালনা কমিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক বীরেন্দ্র চন্দ্র রায়কে প্রথমে প্রধান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের কাজ চালানোর জন্যে এবং গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষক আজিজুল হককে তার পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে বীরেন্দ্র চন্দ্র রায়কে ভারপ্রপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অপরদিকে, সাত মাসেরও বেশি সময় পর মো. আজিজুল হক আজ বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগ মুর্হূতে হঠাৎ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়ে মাঠে অবস্থান নেয় এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে সভাপতিসহ পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র সরিয়ে নিলে শিক্ষার্থী শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যায়। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮৫০ এবং শিক্ষক কর্মচারী ৩১ জন বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ আলম তরফদার জানান, তদন্ত কমিটির আহ্বানে সাড়া না দিয়ে এবং বিনানুমতিতে সাত মাসের বেশি সময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক বুধবার সকালে হঠাৎ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমে আসে। পরে পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্যকে সাথে নিয়ে প্রধান শিক্ষকে বিদ্যালয়ের বাইরে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ ক্লাসে ফিরে যায়।
মন্তব্য