ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কক্সবাজার। কাঁচা ঘরবাড়ি ও প্রচুর গাছপালা ভেঙে গেছে জেলা শহরসহ উপকূলীয় এলাকাজুড়ে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কক্সবাজারে বিদ্যুৎ লাইনের। ঝড়ের থাবায় গাছপালা ছাড়াও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে।
প্রচুর গাছপালা ভেঙে যাওয়ার কারণে বৈদ্যুতিক লাইন উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল টাওয়ারগুলো অচল হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় হামুন সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার বেগে তাণ্ডব চালিয়েছে কক্সবাজারে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, 'মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় জেলার ৯টি উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে প্রাথমিক খবরে কুতুবদিয়া দ্বীপে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। পর্যটন শহর কক্সবাজারেও গাছপালা এবং কাঁচা বাড়ি-ঘর ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।'
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও বাসভবনেরও প্রচুর গাছপালা ভেঙে গেছে। এমনকি জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও জেলা আইনজীবী ভবন সংলগ্ন দীর্ঘদিনের পুরনো কয়েকটি বট ও শিশুগাছও উপড়ে পড়েছে।
গাছপালা ভেঙে যাওয়ায় জেলার বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগও সাময়িক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. ইমাম উদ্দীন জানান, 'গতকাল রাত ৮.১২ মিনিটে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে ১৪৮ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০৮ মিলিমিটার।'
আবহাওয়াবিদ জানান, ‘এবারের ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত এমন প্রচণ্ড গতির হবে, সেটা ছিল কল্পনাতীত। হামুনের আঘাতে আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন তিনটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে গেছে।
সেই সঙ্গে বড় আকারের একটি শিশুগাছও উপড়ে পড়েছে।
শহরের এন্ডারসন রোডের বাসিন্দা ইব্রাহিম জানান, বিদ্যুৎসংকটের কারণে জেনারেটরের চাহিদাও বেড়ে গেছে। টাকা দিয়েও জেনারেটর মিলছে না।
শহর ও শহরতলির কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকায় কাঁচা ঘরবাড়ি বলতে খুব কমই অক্ষত রয়েছে। শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাদশা মিয়া জানান, 'গতকাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টার ঘূর্ণিঝড়ে আমরা ঘরবাড়িহারা হয়ে পড়েছি। আমার ঘরের চাল নিয়ে গেছে বহুদূরে। সেই সঙ্গে বাতাসের থাবায় ভিটার টেংরাও উড়িয়ে নিয়ে গেছে।'
মন্তব্য