ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে উপজেলার বাজারসহ প্রান্তিক হাটবাজারের মুদিদোকান থেকে এখন উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল। বাজারের কয়েক দোকান ঘুরলেও মিলছে না এক লিটারের বোতল।
পাড়া-মহলার মুদি দোকানেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। সব মিলে রমজানে বড় সংকট দেখা দিয়েছে এখন সয়াবিন তেলের বাজার।
বাজার তদারকির জন্যও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো মনিটরিং থাকায় সুযোগে লুফে নিচ্ছেন মুনাফা অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের দোকানীদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে দেখা যাচ্ছে, প্রায় প্রতি দোকানে সয়াবিন তেল থাকলেও প্রকাশ্যে না রেখে গোপনে রাখা হচ্ছে। কেউ খালি তেল বিক্রি করছে না। এক লিটার তেলের সঙ্গে ক্রেতাদের নিতে হচ্ছে জোড়পূর্বক চাল, ডাল, ছোলাসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। তা না হলে বিক্রি করা হচ্ছে না তেল।
চরভদ্রাসন বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানীদের ভাষ্য, 'আমরা কোম্পানীর প্রতিনিধির কাছ থেকে তেল চেয়েও পাচ্ছি না। ১২ পিসের এক লিটারের এক কাটন তেল চাইলে আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে কোম্পানীর অন্য মালামাল নিতে। বাধ্য হয়ে তাদের কাছে চাহিদা না থাকা পণ্যও কিনতে হচ্ছে। স্থানীয় ডিলাররা আমাদের তেল দিলে রমযানে বাজার সংকট দেখা দিতো না।'
চরভদ্রাসন বাজারে আসা ক্রেতা হান্নান মিয়ার অভিযোগ, এক লিটার তেল ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি নিচ্ছে। বোতলের গায়ে লেখা আছে ১৭৫ টাকা। কয়েক দোকান ঘোরার পর কোনো কোনো দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা দিলে তেল আছে, না দিলে সাফ বলছে নাই।
আরেক ক্রেতা ফরিদুল ইসলাম ক্ষোভের স্বরে বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাজার তদারকি করছে না। যে কারনে দোকানীরা যেভাবে পারছে সেভাইবেই দাম হাকিয়ে নিচ্ছে। বাজার মনিটরিং করা হলে বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও হতো না।
উপজেলার অন্যান্য বাজার ঘুরেও দেখা যায়, কয়েক দোকান ঘুরেও খালি তেল মিলছে না। অনেক দোকানে পাওয়া গেলেও লিটার প্রতি ১০-১৫ টাকা বেশি।
এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও বোতলের গায়ে মূল্য লেখা নেই। বিক্রেতারা মুছে লিটার ১৯৫ টাকা চাইছেন। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৭৫ টাকা। তবে এ বাজারগুলোয় খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। খোলা লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২শ' টাকা করে। কিন্তু খোলা সয়াবিন তেলের সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৫৭ টাকা।
চরভদ্রাসন বাজারের মুদি দোকানী বলেন, 'বেশ কিছুদিন ধরে ডিলারের কাছে তেল চেয়েও পাচ্ছি না। রোজার আগে বাজারে মানুষের কেনাকাটা বেশি হয়। এ সময় কোম্পানিগুলো তেল দেওয়া বন্ধ করেছে। এতে বাজারে কোনো বোতলজাত তেল নেই। নতুন করে দাম বাড়াতেই কোম্পানিগুলো এমন করছে।'
চরভদ্রাসন ইউএনওমনিরা খাতুন জানান, 'রমযান শুরু হয়েছে। বাজারে তেলের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারছি। দ্রম্নত বাজার মনিটরিং করা হবে।'
মন্তব্য