দশ মাসে ১৩০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে গেছে বিদেশিরা: সংসদে অর্থমন্ত্রী

  • বাণিজ্য ডেস্ক
  • মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪ ১২:০৬:০০
  • কপি লিঙ্ক

গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকরা তাদের আয় থেকে ১৩০ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকগুলোর এই পরিমাণ টাকা পাওনা আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা পাওনা আছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেনের (বিএডিসি) কাছে। এছাড়া বড় অঙ্কের টাকার মধ্যে চিনিকলগুলোর কাছে পাওনা প্রায় ৭ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা, সার, রাসায়নিক ও ওষুধ শিল্পের কাছে পাওনা ৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কাছে পাওনা ৫ হাজার ১৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ বিমানের কাছে পাওনা ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। 
এদিকে, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল র্পযন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকরা তাদের আয় হতে ১৩০ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন (১৩ কোটি ৫৮ লাখ) মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে আজ জাতীয় সংসদে তিনি এ তথ্য জানান। 

মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বছরে আয় সংশ্লিষ্ট তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত নেই। গত ১০ মাসে বাংলাদেশে বসবাসকারি বিদেশি নাগরিকগণ তাদের আয় হতে ১৩০ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার গেছে ভারতে। এছাড়া চীনে ১৪.৫৬ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কায় ১২.৭১ মিলিয়ন ডলার, জাপানে ৬.৮৯ মিলিয়ন ডলার, কোরিয়ায় ৬.২১ মিলিয়ন ডলার, থাইল্যান্ডে ৫.৩০ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্যে ৩.৫৯ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানে ৩.২৪ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রে ৩.১৭ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২.৪০ মিলিয়ন ডলার ও অন্যান্য দেশে গেছে ২১.৯২ মিলিয়ন ডলার গেছে।

চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো ব্যাংকেই আর্থিক সংকট নেই। তবে কতিপয় ব্যাংকে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি ও তারল্য সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে কর্মকর্তা ৯টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবং সাতটি ব্যাংকে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির চলমান সংকটের মূলে যে কারণগুলো রয়েছে তা হলো- বৈশ্বিক পণ্য বাজারে সরবরাহে অনিশ্চয়তা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি। 

অর্থনৈতিক এ সংকট কাটিয়ে দ্রবমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত হ্রাস পাওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হওয়ায় মানুষ আমানত তুলে বিনিয়োগ করছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থাহীনতা বা মূল্যস্ফিতির কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত কমছে না।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য