ইসরাইলের বিচার চেয়ে জাতিসংঘের কাছে যে আবেদন জানালেন এরদোগান

  • অনলাইন
  • বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১০:১১:০০
  • কপি লিঙ্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। টানা দেড় মাস ধরে চালানো বর্বর সেই আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ১০ হাজারের বেশি।

ইসরাইলি এই হামলা থেকে বাদ যায়নি গাজার স্কুল, মসজিদ— এমনকি হাসপাতালও। এই পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের অবশ্যই বিচার হতে হবে বলে জাতিসংঘের প্রধানকে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি করতে হবে বলে প্রেসিডেন্ট এরদোগান মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনকে যুদ্ধাপরাধ বলেও অভিহিত করেছেন বলে তুর্কি প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, বুধবার গাজা ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকের আগে মঙ্গলবার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, গাজা ইস্যুতে বুধবারের পরিকল্পিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে এরদোগান ও গুতেরেস ইসরাইলের বেআইনি হামলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা, অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফোনকলে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন— ইসরাইল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখের সামনে আন্তর্জাতিক আইন, যুদ্ধের আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে নির্লজ্জভাবে পদদলিত করে চলেছে এবং ইসরাইল যে অপরাধ করেছে, তাতে দেশটিকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে জবাবদিহি করতে হবে।’

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান নিউইয়র্কে বুধবার অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে যোগ দেবেন।

উল্লেখ্য, গাজায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে। দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত শুক্রবার চার দিনের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরাইল।

এ ছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি শিশু। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও চার হাজার।

মূলত গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি চললেও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় নিহত ১৫ হাজার ছাড়াল। গাজার মিডিয়া অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজার রাস্তা এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও মৃতদেহ উদ্ধারের পর অঞ্চলটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।

রয়টার্স বলছে, তুরস্ক গাজায় ইসরাইলের হামলার কঠোর সমালোচনা করে আসছে এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন বিরোধ নিরসনে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে আলোচনার সুযোগ দেওয়ার জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট এরদোগান গাজায় ইসরাইলি হামলাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন এবং ইসরাইলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবেও অভিযুক্ত করেছেন। যদিও ইসরাইল এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইহুদিবাদী এই দেশটির দাবি, তারা শত্রুর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য কাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য