সহকর্মীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ছবি ধারণ করার অভিযোগে নাটোরের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাকিব হোসেন ওরফে রয়েলকে (৩৩) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে ট্রাইবুন্যালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে ওই কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাকিব হোসেন নাটোরের সিংড়ার মাদারীপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে এবং সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল সূত্রে জানা যায়, সিংড়া থানার ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের অভিযোগপত্রভূক্ত আসামি রাকিব হোসেন ওরফে রয়েল মঙ্গলবার দুপুরে ট্রাইবুন্যালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। ভুক্তভোগী নারীও ওইসময় আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান জামিনের আবেদনের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামি রাকিব হোসেনের জামিনের আবেদন নাকোচ করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা এক নারী সহকর্মীকে নির্জন কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের মুহূর্ত নিজেই ভিডিও করেন। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই নারী কর্মকর্তাকে তিনি বারবার ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে তিনি তার ধারণ করা ভিডিওটি কয়েকজনকে দেখার জন্য মুঠোফোনে পাঠিয়ে দেন। তখন ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মকর্তা সিংড়া থানায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা ওই আসামির হেফাজত থেকে অন্তরঙ্গ ছবি/ভিডিওসহ মুঠোফোন জব্দ করেন এবং সিআইডি কার্যালয়ে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠান। ফরেনসিক পরীক্ষায় মুঠোফোনে ছবি/ভিডিও পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ পরিদর্শক আব্দুর রহিম গত ২৮ জুলাই পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাকিব হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রটি আদালত আমলে নেন। আজ আসামি বিচারিক ট্রাইবুন্যাল হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নাকোচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে জঘন্য ও গুরুতর অভিযোগ থাকায় বিচারক জামিনের আবেদন নাকোচ করেছেন।
মন্তব্য