বগুড়ায় খালা-ভাগ্নি গণধর্ষণের শিকার, গ্রেপ্তার ৫

  • অনলাইন
  • বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩ ০৬:০৭:০০
  • কপি লিঙ্ক

নারায়ণগঞ্জ থেকে রংপুর আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে বগুড়ার কাহালুর পাইকড় এলাকায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন খালা ও ভাগ্নি। এ সময় তাদের কাছে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন লুণ্ঠিত হয়।

এ ঘটনায় থানা মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বগুড়ার কাহালু উপজেলার কুশলীহার পূর্বপাড়ার আশরাফ আলী ফকিরের ছেলে মামলার মূল আসামি আবুল কাশেম মানিক (৩৫) ও মোস্তফা ফকিরের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব (২৫), বাগইল দক্ষিণপাড়ার আবু বক্কর সিদ্দকের ছেলে রাকিব হাসান (২৩), একই গ্রামের উত্তরপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে শাকিল হোসেন (২৩) ও আইয়ুব আলীর ছেলে আতিক রহমান প্রান্ত (২২)।

ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ জুলাই রাত সোয়া ৮ টার দিকে কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল পশ্চিমপাড়া গ্রামে। এই ঘটনায় ১৯ জুলাই কাহালু থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। মামলার পর বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা পর্যন্ত কাহালুর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  

বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় প্রেস ব্রিফিং-এ  এসব তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবত্তীর্ জানান, ধর্ষণের শিকার ওই নারী ঢাকার নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে ক্লিনার হিসেবে কাজ করেন। গত ১২ জুলাই দুপুরে স্বামীর সাথে অভিমান করে তিনি বড় বোনের ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে রংপুরে আত্মীয়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে রব্বানী নামের এক কলিগের সাথে দেখা হলে তিনিও তাদের সাথে রওয়ানা হন।  

এরপর দিবাগত রাত ২ টার দিকে বগুড়ার বারপুরে তাদের বাস নষ্ট হলে রব্বানী তাদেরকে নিয়ে কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নে রাজ্জাক নামে এক বন্ধুর বাড়িতে যান। তখন মামলার মূল আসামি মানিক রাজ্জাকের বাড়িতে খারাপ মেয়ে এসেছে বলে এলাকায় রটিয়ে দেন। এসব শুনে রাজ্জাক নামে ওই ব্যক্তি তাদের চলে যেতে বলে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে তারা তিনজন একটি ভ্যানে করে রংপুরের বাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল গ্রামের বড়পুকুর ব্রীজের কাছে পৌঁছালে আসামি মানিক তাদের পথরোধ করে এবং ৪-৫ জন বন্ধুকে ফোন দিয়ে আসতে বলে।  

এরপর মামলার মূল আসামি মানিক অপর আসামিদের নিয়ে ভ্যনচালককে ভয় দেখিয়ে তাদের তিনজনের কাছে  থাকা ৭২ হাজার টাকা, একজোড়া কানের দুল ও একটি বাটন মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপরা আসামিরা ভ্যান চালক ও রাব্বানীকে মারধর করে ভিকটিম ওই নারী এবং তার বড় বোনের ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে অপহরণ করে। পরে একই এলাকার পশ্চিমপাড়ার একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের গণধর্ষণ করে।

পুলিশ সুপার বলেন, এই ঘটনার পর ভিকটিম ওই নারী তার বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় যান। সেখানে তারা চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এরপর সুস্থ হয়ে কাহালুর পাইকড় গ্রামে আবার আসেন তারা। রাজ্জাককে সাথে নিয়ে কাহালু থানায় অভিযুক্তদের নামে মামলা করেন। মামলার পরপরই পুলিশ কাহালুর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণ ও ডাকাতির বিষয় স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবত্তীর্।

বগুড়ার কাহালু থানার অফিসার ইনচার্য মাহামুদ হোসেন এর তত্বাবধানে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।

কাহালুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ জানান, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মানিক এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তার পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য