ধর্ষণের পর পড়শিদের অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা

  • অনলাইন
  • রবিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২২ ০৩:০১:০০
  • কপি লিঙ্ক

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর পাড়া-পড়শিদের অপমান সইতে না পেরে বিষপানের পর মৃত্যুর সাথে দীর্ঘ ১৭ দিন লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেছে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) জোনাকি আক্তার (১৫) নামে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের কুত্তামারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় শনিবার (৮ জানুয়ারি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক নাজমুলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।

ভুক্তভোগীর পিতা আব্দুল জব্বার জানিয়েছেন, শেরপুর জেলা সদরের চান্দেরনগর গ্রামের জনৈক চাঁন মিয়ার ছেলে নাজমুল (২৮) কুত্তামারা গ্রামে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার কাজ করতো। গত ১৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল জব্বার তার কন্যা জোনাকিকে ঘরে একা রেখে পাশের বাজারে চা পান করতে যান। জোনাকির মা ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।

এসময় জোনাকিকে ঘরে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় নাজমুল। পরে ঘটনা জেনে জোনাকির বাবা পুলিশের আশ্রয় নিতে চাইলে স্থানীয় লোকজন তাতে বাধা দেয় এবং স্থানীয়ভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেয়।

এ ঘটনা প্রকাশ পেলে সম্মানহানির ভয়ে আব্দুল জব্বার তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। তবে এক পর্যায়ে বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ হয়ে পড়লে জোনাকিকে নানাভাবে অপমান করে স্থানীয়রা।

এ অপমান সহ্য করতে না পেরে গত ২১ ডিসেম্বর জোনাকি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। প্রথমে তাকে নালিতাবাড়ী ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জোনাকির কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। পরদিন আবারও অবস্থার অবনতি হলে আবারও তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার জোনাকির মৃত্যু হয়।

এদিকে, এর আগেই গত ২ জানুয়ারি জোনাকির পিতা আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাজমুলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে। প্রধান আসামি নাজমুল এখনও পলাতক রয়েছে।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, এ ঘটনায় মেয়ের পিতা আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে সহযোগী দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য