যেখানে সাঁকো আর নৌকা-ই একমাএ ভরসা, সেখানে এখন ব্রিজ হবে এলাকাবাসীর চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক

  •  অমর চাঁদ গুপ্ত ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) 
  • রবিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২১ ০৩:০৬:০০
  • কপি লিঙ্ক

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ৯ গ্রামবাসীর স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। ইউনিয়নের মুছির ঘাট এলাকায় একটি ব্রিজের জন্য দীর্ঘ দিনের দাবি আজ পূরণ হওয়ার পথে। এই এলকা দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনায় একটি ব্রিজের জন্য তাদের করতে হয়েছে নানা কষ্ট। একসময় ভরসা ছিল সাঁকো। সেই সাঁকো ভেঙ্গে গেলে দড়ি টানা নৌকা। অবশেষে ভোগান্তির স্বীকার ৯ গ্রামবাসীর সেই বাঁশের সাঁকো কিংবা কখনও দড়ি টানা নৌকা চলার স্থলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল ব্যুরো (এলজিইডি) নির্মাণ করবে পাকা সেতু। সেতু নির্মাণের খবরে ভুক্তভোগী গ্রামবাসীদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ওই স্থানে ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৭৯৪ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে দ্রূত সময়ের মধ্যে সেখানে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ হয়েছিল। ২০১৭ সালের স্মরণীয় ভয়াবহ বন্যার পানির তোড়ে সাঁকোটি ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। নদীর দুই পাড়ের ৯ গ্রামবাসীকে জরুরী কাজে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার। সময় বাঁচাতে গ্রামবাসীরা খরার সময় হাটুপানি নদী ডিঙিয়ে এবং নদীতে পানি থাকলে নৌকায় পারাপার করেন। এতে অর্থ ও সময় দুই’ই নষ্ট হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ওই ৯ গ্রামবাসীকে।  

সরেজমিনে গতকাল বুধবার শিবনগর ইউনিয়নের মুচিরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর একপ্রান্তে পাঠকপাড়া ও অপরপ্রান্তে কুয়ারপুর। সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো থাকলেও ২০১৭ সালের স্মরণীয় বন্যার পর আর দেখা মিলেনি সাঁকোটির। সাঁকোটি না থাকায় নদীর পশ্চিমপ্রান্তের পাঠকপাড়া, শমশেরনগর, চোকারহাট, মল্লাই ও মদনপুরের জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদীর পূর্বপ্রান্তের শিবনগর পরিষদসহ বাজারে যেতে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার। 

একইভাবে নদীর পূর্বপ্রান্তের কুয়ারপুর, মহেশপুর শিবনগর ও পলিশিবনগর গ্রামবাসীকে পশ্চিমপ্রান্তে জরুরী প্রয়োজনে যেতে হলে ঘুরতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার পথ। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই নষ্ট হচ্ছে। কেউ কেউ সময় বাঁচাতে খরার সময় হাটুপানি নদী পার হন আবার নদীতে পানি থাকলে নৌকার মাধ্যমে পার হন।
    
এদিকে ব্রিজ নির্মাণের খবরে শিবনগর কুয়ারপুর গ্রামের পলিন সরকার, শেফালী বেগম এবং পাঠক পাড়া গ্রামের সুজয়, মনরঞ্জন দাস ও মন্টু মিয়া বলেন, সেতু নির্মাণ হচ্ছে শুণে খুব খুশি হয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই বাঁশের সাঁকোই একমাএ ভরসা। 

ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রহমান চৌধুরী বিপ্লব বলেন, খুব দ্রূত সময়ের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী রায়হানুল কবীর বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। দ্রূত সেতু নির্মাণ শুরু হবে। 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য