মাদারীপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ: ৫০ হাজার টাকায় রফাদফার চেষ্টা

  • মাদারীপুর প্রতিনিধি :
  • শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০৮:৫৫:০০
  • কপি লিঙ্ক

মাদারীপুর শহরের ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্যে শহরের প্রভাবশালী একটি মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের সামনে দোষীদের বিচারের দাবীতে অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাদারীপুর সদর থানা পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের ডাসার থানার আটিপাড়া গ্রামের রুনা আক্তার (২২) নামে এক অন্তসত্ত্বার প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফায়সাল কাবীর ও ডা. ফারজানা আফিয়া মেঘলা ওই প্রসূতিকে সিজার করে একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ করে। এসময় প্রসূতির রক্ত প্রয়োজন বলে তার স্বামী রমজান মালকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির অবস্থা বেগতিক দেখে নিজেরাই একটি এ্যাম্বুলেন্সে তুলে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কর্তব্যরত চিকিৎস দেড় থেকে দুই ঘন্টা আগে প্রসূতি মারা গেছে বলে জানান। স্বজনরা রুনা আক্তারের মরদেহ নিয়ে পুনরায় ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে আসে। তখন ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মৃতদেহটি দাফন করতে বলেন। কিন্তু বিয়ষটি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশকে জানালে সন্ধ্যার দিকে সদর থানা পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।

নিহতের স্বামী রমজান মাল জানান, আমাকে রক্ত আনার কথা বলে হাসপাতালের লোকজন নিজেরাই আমার স্ত্রীকে ফরিদপুর পাঠিয়ে দেয়। তারা কোন কাগজপত্র দেয়নি। পরে ফরিদপুর গিয়ে জানতে পারি ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে সিজার করার সময়েই আমার স্ত্রীকে ওরা মেরে ফেলছে। তারা আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানো জন্যে অনুরোধ করে। আমি টাকা চাই না, দোষীদের বিচার চাই।

তিনি আরো জানান, সিজার করার সময় এনেস্থিশিয়া ডাক্তার ছিল না। ফলে আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসা করে মেরে ফেলেছে।
তবে ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে বলেন, রোগীর প্রেসার বেশি থাকায় চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করে। সেখানে গিয়ে রোগী মারা গেছে। আমাদের কোন অবহেলা ছিল না। আর টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার বিষয় বলেন, রোগী গবীর হওয়ায় দাফন-কাফনের জন্যে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল।

এব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান মিয়া জানান, নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

মন্তব্য