সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নে বাশুড়িয়া গ্রামে প্রতিভা কিন্ডার গার্টেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলে চলছে নিয়মিত পাঠদান ও কোচিং বাণিজ্য। সারা দেশব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাস আতংক বিরাজ করলেও এই প্রতিষ্ঠানে নেই তার কোন রেশ। মানা হচ্ছেনা সরকারের কোন নিয়ম নীতি।
ছাত্রছাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব ও স্ব্যস্থ্যবিধি না মেনে দেয়া হচ্ছে পাঠদান। সকালে চলে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেনীর নিয়মিত পাঠদান ও বিকেলে চলে কোচিং ক্লাস।
বৃহস্পতিবার সকালে ও বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিভা কিন্ডার গার্টেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলে এই চিত্র। ছাত্রছাত্রীরা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বই-খাতা রেখে অন্যত্র চলো যায় ।
এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন ছাত্রছাত্রী বাংলাদেশ জমিনকে জানায়, তাদের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জোর পূর্বক তাদের দিয়ে ক্লাস করাচ্ছে। যদি কেউ ক্লাস না করে তা হলে তাকে আগামী পরিক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হবেনা। এছারাও করোনা বলতে কিছু নেই। এগুলো পুরোটাই ভিত্তিহীন রোগ। তাই নিয়মিত ক্লাস করতে হবে না হলে স্কুলে আর কখনো ক্লাস করতে দেবেনা। তাই আমরা বাধ্য হয়ে স্যারের কথা মতো প্রতিদিন আগের নিয়মে ক্লাস করছি।
কয়েকজন অভিভাবক বাংলাদেশ জমিনকে জানান, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোছাঃ যুথিকা পারভিন, নিয়মিত আমাদের বাচ্চাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে স্কুলে ক্লাস করাচ্ছে। আমরা নিষেধ করলেও তারা শুনতে নারাজ। এমন কি সরকারের কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা করেনা তারা। নিজেদের ইচ্ছেমত পরিচালনা করছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোছাঃ যুথিকা পারভিন বাংলাদেশ জমিনকে জানান, প্রথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী ছাত্রছাত্রীদের সকল বিবরণ শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে। তাই ছাত্রছাত্রীদের ডেকে এনে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান ও বিকেলে কোচিং করানো হচ্ছে।
তবে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বাংলাদেশ জমিনকে জানান, তিনি কোন ক্লাসে পাঠদান ও কোচিং করাচ্ছেন না। তিনি এখন শিক্ষকতা বাদ দিয়ে ধানের ব্যবসা করছেন।
রায়গঞ্জ কিন্ডার গার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি টিএম কামরুজ্জামান লাবু বাংলাদেশ জমিনকে জানান, সরকারী নিশেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেউ প্রতিষ্ঠান চালালে আর এর সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এতে আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীমুর রহমান বাংলাদেশ জমিনকে জানান, সরকারী আদেশ অমান্য করে কেউ কোন স্কুল বা কোচিং চালাতে পারবেনা। যদি কেউ চালায় তা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিভা কিন্ডার গার্টেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। খুব তারাতারি এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ জমিন/ সংবাদটি শেয়ার করুন
মন্তব্য